দৈনিক প্রাণের শহর বিডি ডেস্ক:
বাংলাদেশে নারীদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ জরায়ুমুখ ক্যান্সার। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবারের মত একটি অসংক্রামক ব্যাধি জরায়ুমুখ ক্যান্সার নির্মূলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৮ সালের ১৭ নভেম্বর সুনির্দিষ্ট কর্মসূচী ঘোষণা করে।
বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর নভেম্বরের ১৭ তারিখ সার্ভিক্যাল ক্যান্সার এলিমিনেশন ডে অফ একশন হিসেবে উদযাপন করা হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার নির্মূলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা মূলত তিনটি কর্মকৌশল গ্রহণ করেছে-
১। জরায়ুমুখ ক্যান্সার আক্রান্ত প্রতি দশ জন নারীর নয় জনের যথাযথ চিকিৎসা
২। ৩৫ বছর বয়স্ক প্রতি দশ জন নারীর সাত জনের জরায়ুমুখ ক্যান্সারের স্ক্রিনিং
৩। অনুর্ধ্ব ১৫ বছরের প্রতি দশ জন মেয়ের সাত জনের এইচপিভি ভাইরাসের টিকা।
বাংলাদেশে ক্যান্সার প্রতিরোধে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কম্যুনিকেবল ডিজিস কন্ট্রোল বিভাগের অধীনে, নিয়মিতভাবে স্তন এবং জরায়ুমুখের ক্যান্সার স্ক্রিনিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। দেশের সকল পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে এই কার্যক্রম চলছে যার মাধ্যমে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় এবং দ্রুত চিকিৎসা প্রদান সম্ভব হবে।
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগীদের জন্য চিকিৎসা সহজলভ্য করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচীর আওতায় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে যার মাধ্যমে দেশ জুড়ে বিনামূল্যে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের বিনামূল্যে এক ডোজ এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে।
জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে গত ১৯ নভেম্বর, এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রেডিওথেরাপি বিভাগের উদ্যোগে সচেতনতামূলক সেমিনারে
লক্ষণ এবং প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে আলোচনায়, ডা. মোঃ মোহিবুর হোসেন নীরব তার বক্তব্যে জানান, “ক্যান্সার মানেই মৃত্যু নয়- প্রাথমিক পর্যায়ে জরায়ুমুখ ক্যান্সার রোগ নির্ণয় এবং যথাযথ চিকিৎসা দেয়া গেলে মায়েদের জীবন বাঁচানো সম্ভব।”
এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,দিনাজপুর’র আসমাউল-মাহফুজ গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত “সার্ভিক্যাল ক্যান্সার এলিমিনেশন ডে অফ একশন ২০২৩” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডা. এ এফ এম নূরউল্লাহ, অধ্যক্ষ, এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ এবং ডা. এ টি এম নুরুজ্জামান, পরিচালক, এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ডা সৈয়দ নাদির হোসেন, উপাধ্যক্ষ ও গাইনি বিভাগের বিভাগী প্রধান ডা. ইশরাত শারমিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন রেডিওথেরাপি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সমীরণ কুণ্ড। মেডিকেল কলেজের সম্মানিত বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, হাসপাতালের চিকিৎসকদের পাশাপাশি কর্মরত নার্স এবং বিভিন্ন বর্ষের প্রায় চারশ মেডিকেল শিক্ষার্থী সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন যেখানে মেডিসিন ক্লাব, এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ইউনিটের সার্বিক সহযোগিতা করে।
উক্ত সভায় জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধী এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনটি সফল করতে, সহযোগিতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে সকলের প্রতি আহবান জানানো হয় ।
