শেরপুর বগুড়া প্রতিনিধি:
ছনের ডালা তৈরি করে সাবলম্বী হয়েছেন বগুড়া শেরপুরের শত শত নারী। উপজেলার প্রায় ৩৫টি গ্রামের ৮ থেকে ১০ হাজার নারী ছন ও তালপাতা দিয়ে ঝুড়ি, বাটি, ডালা, কড়াই ও ট্রেসহ নিত্য ব্যবহার্য বিভিন্ন নান্দনিক পণ্য তৈরি করে থাকেন। পাররিবারিক কাজ সেরে অবসরে এই পণ্য তৈরি করে শুধু অভাব দূর করা নয়, তারা হয়ে উঠেছেন আত্মনির্ভরশীল নারী।
নারীদের নিপুণ ছোঁয়ায় ছন ও তালপাতার এসব পণ্য ইতোমধ্যে দেশের সীমানা পেরিয়ে ইউরোপ, আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোতে বেশ চাহিদা করে নিয়েছে। যা থেকে আসছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। এতে করে নারীদের সাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি ঘুরছে দেশের অর্থনীতির চাকাও।
জানা যায়, ১৯৯৬ সালে উপজেলার হাঁপুনিয়া, বনমরিচা, মহিপুর ও আরও দু-একটি গ্রামে ঢাকা হ্যান্ডিক্রাপ্টস এর মাধমে প্রথমে এই ডালা তৈরি শুরু হয়। ধিরে ধিরে এর প্রসারতা বেড়ে বর্তমানে উপজেলার গাড়িদহ, শাহ বন্দেগী, কুসুম্বি, খানপুর, বিশালপুরসহ ১০টি ইউনিয়নের প্রায় ৩৫টি গ্রামের ৮ থেকে ১০ হাজার নারী এই হস্তশিল্পের কাজ করেন। এসব গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, নারীরা সারিবদ্ধভাবে বসে এই কাজ করছেন। আবার কোথাও এলামেলোভাবে বসে কাজ করার দৃশ্যও চোখে পড়ে। এসব পণ্যগুলো দেশের বাইরে রপ্তানী করার জন্য রয়েছে বেশ কিছু এজেন্ট। তারা সমিতির মাধ্যমে বা ব্যক্তির কাছ থেকে এসব পণ্য সংগ্রহ করে বিদেশে রপ্তানী করে থাকেন।
খানপুর গ্রামের কোহিনুর খাতুন, সালমা খাতুন, হাজেরা খাতুন, হাঁপুনিয়া গ্রামের জান্নাতী খাতুন, কুলছুম, কেল্লা গ্রামের তারাভানু, রেবা খাতুন এর সাথে কথা বলে জানা যায়, পরিবারের দৈনন্দিন কাজ সেরে তারা সপ্তাহে ৮/১০টি ডালা তৈরি করে থাকে। তাতে করে সপ্তাহে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা আয় হয়। তবে যেসব নারীরা দিন রাত কাজ করে, তারা সপ্তাহে আরও বেশি আয় করে থাকেন।
হাঁপুনিয়া গ্রামের ডালা ব্যবসায়ী ইনছান আলম জানান- দিন দিন এই ডালার চাহিদা বেড়ে চলেছে। এলাকায় ডালা তৈরির পাশাপাশি ডালা ব্যবসায়ীও বাড়ছে। আগামী দু-এক বছরের মধ্যে উপজেলার প্রতিটি গ্রামে এই ডালা তৈরি শুরু হবে। এই ডালা তৈরির মাধম্যেই নারীরা আরও সাবলম্বী হবেন।

