বগুড়া প্রতিনিধি:
বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মহাষ্টমী তিথিতে বগুড়ায় কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকাল ১০টায় শাজাহানপুর উপজেলার গণ্ডগ্রাম এলাকার শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রমে এই পূজার আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে আশ্রম প্রাঙ্গণ।
হিন্দুশাস্ত্র মতে কুমারী মেয়েদের দেবীজ্ঞানে এবং মা জ্ঞানে পূজা করা হয়। এ কারণে যুগ যুগ ধরে দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীর দিনে এই পূজা হয়ে আসছে।
বগুড়ায় কুমারী পূজার জন্য মাতৃভাবের পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে এ বছর কুমারী মায়ের আসনে বসানো হয় ৮ বছর বয়সী নিভৃত মন্দির সাহাকে। কুমারীর বয়স ৮ বছর হওয়ায় উমা নামে পূজিত হন।
পূজা কার্যক্রম পরিচালনা করেন আশ্রমের পুরোহিত বাসুদেব ব্যানার্জী। তিনি বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও মহাঅষ্টমীতে বগুড়ায় কুমারী পূজা হয়েছে। পূজায় অসংখ্য ভক্তরা অংশগ্রহণ করেন। তিনি আরও বলেন, বিশেষত দুর্গাপূজার অংশ হিসেবে কুমারী পূজা হয়। শাস্ত্রমতে কুমারী পূজার উদ্ভব বানাসুর বা কোলাসুরকে বধ করার মধ্য দিয়ে।
পূজা দেখতে আসা মনিকা ঘোষ বলেন, ‘পরিবারের সবাইকে নিয়ে কুমারী পূজা দেখতে এসেছি। মূলত নারী শক্তির জয় হোক, নারীরা তাদের প্রাপ্য সম্মান পাক আজ এই প্রার্থনা করি।’
বনশ্রী সাহা বলেন, গত তিন বছর ধরে এই আশ্রমে কুমারী পূজা হচ্ছে। জগত মাতার শুদ্ধতার প্রতিক হচ্ছেন কুমারী। স্বামী বিবেকানন্দন প্রথম কুমারী পূজা শুরু করেছিলেন। মানুষের মধ্যেই মা দুর্গা রয়েছেন, এই বোধটাকেই সাধারণ মানুষের প্রচার করার জন্য কুমারী পূজা শুরু করা হয়েছিলো।’
এবছর জেলার ১২টি উপজেলায় মোট ৬২৮টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা হচ্ছে। বিভিন্ন মণ্ডপে উপোষ থেকে ভক্তরা দুর্গা মায়ের চরণে পুষ্পাঞ্জলি দিয়েছেন। এদিকে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে প্রশাসন ও মন্দির কমিটির পক্ষ ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। সারাদেশে এ বছর ৩২ হাজার ৬৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে। আগামী ১৩ অক্টোবর রোববার বিজয়া দশমী প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ শারদীয় দুর্গোৎসব।