এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা এ বছর বগুড়া জেলার সর্বমোট ৬৮৬ টি পূজা মণ্ডপে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে এসবের মধ্যেও ব্যতিক্রমী এক নজির স্থাপন করেছে গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের গোলাবাড়ি পূজা মণ্ডপ। সেখানে প্রতিমা তৈরি হয়েছে ককশীট দিয়ে – যা স্থানীয়দের মাঝে যেমন কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে, তেমনি ছড়িয়ে দিয়েছে এক অনন্য বার্তা।
বিকল্প উপায়ে প্রতিমা নির্মাণ, ” গোলাবাড়ি পূজা কমিটির সদস্যরা জানান, নির্ধারিত সময়ে প্রতিমা নির্মাণকারীদের পাওয়া না যাওয়ায় তারা পড়ে যান দুশ্চিন্তায়। তবে হতাশ না হয়ে তারা নতুন পথ বেছে নেন। সাধ্যমতো ককশীট ব্যবহার করে প্রতিমা তৈরি করেন এবং তাতেই যথাযোগ্য মর্যাদায় দুর্গাপূজার আয়োজন করেন।
কমিটির এক সদস্য বলেন, “সময়মতো প্রতিমা তৈরি করা সম্ভব হয়নি বলে আমরা প্রথমে খুবই চিন্তিত ছিলাম। তবে পরে ভাবলাম, দুর্গাপূজা তো শুধু প্রতিমার নয় – এটা আমাদের ভক্তি, আনন্দ আর একত্রিত হওয়ার উৎসব। তাই ককশীট দিয়েই প্রতিমা সাজিয়ে পূজা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।”
উৎসবের আমেজে মুখরিত জনপদ, ” পূজার সকালে মণ্ডপ এলাকায় খুব একটা জমজমাট পরিবেশ না থাকলেও দুপুর গড়াতেই দৃশ্যপট পাল্টে যায়। ঢাক-ঢোল, কাঁসর, বক্সে গান আর উৎসবের ছন্দে মুখরিত হয়ে ওঠে সারা এলাকা। নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ – সকলের অংশগ্রহণে পূজা মণ্ডপ রূপ নেয় এক প্রাণবন্ত মিলনমেলায়।
বিশ্লেষণ ও বার্তা, “গোলাবাড়ির এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ প্রমাণ করে, ধর্মীয় উৎসবের সৌন্দর্য শুধুই বাহ্যিক অলংকারে সীমাবদ্ধ নয়। এর মূল উদ্দেশ্য ভক্তি, শ্রদ্ধা, ঐক্য এবং মানবিক বন্ধনের বহিঃপ্রকাশ। প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে সৃজনশীলতার মাধ্যমে ধর্মীয় বিশ্বাসকে ধরে রাখার এমন প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণাদায়ক।
এই উদ্যোগ বার্তা দেয়-সত্যিকারের ধর্মীয় চেতনায় প্রতিবন্ধকতা কখনোই বাধা হয়ে দাঁড়ায় না, যদি থাকে একনিষ্ঠতা, উদ্ভাবনী শক্তি এবং মিলেমিশে এগিয়ে চলার মনোভাব।

