এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়ার মহাস্থান গ্রামে একটি ব্রিজ ৮ গ্রামের মানুষের দুঃখ দুর্দশা ঘুচাবে বদলে দিতে পারে এলাকার কৃষকের ভাগ্য। কৃষিতে ব্যাপক বিপ্লব ঘটবে এমন দীর্ঘদিনের দাবী মহাস্থান এলাকাবাসীর।।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের মহাস্থান আকন্দপাড়া গ্রামে করতোয়া নদীর উপর প্রায় ২০০মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ করা এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী । একটি সেতু হলেই ৮ গ্রামের লাখো মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নতি ও সেই সাথে কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করেন সচেতন মহল। নদী পার হলেই হাজার হাজার বিঘা আবাদি জমি চোখে পড়ে। আর এ এলাকাকে বলা হয় কৃষি প্রধান এলাকা।
করতোয়া এ নদীর পশ্চিম পাড়ে রয়েছে মহাস্থান গ্রাম, পূর্ব দিকে রয়েছে লাহিড়ীপাড়া, সাতশিমুলিয়া, পীরগাছা, জাহানাবাদ, নন্দীপাড়া, রহমতবালা, তেলিহারা সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। এছাড়াও ঐতিহাসিক মহাস্থানের সাথে যোগাযোগ হতে এই ব্রিজ নির্মাণ হলে শিক্ষার্থীরা মহাস্থান আলিম মাদ্রাসা, উচ্চ বিদ্যালয়, মাহীসওয়ার ডিগ্রি কলেজ মহাস্থান জাদুঘর, মসলা গবেষণা কেন্দ্র ও হযরত শাহ সুলতানের মাজার জিয়ারত করতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দুর্ভোগ এড়াতে সহজ পথই হবে একমাত্র এ সেতু।
এলাকাবাসী জানান, আমাদের আয়ের প্রধান উৎসই হলো কৃষিখাত। আমাদের সবগুলো জমি নদীর ওপারে। ফসল উৎপাদন করতে আমাদের নদীর ওপারেই যেতে হয়। বর্ষাকালেও আমাদের নদী সাঁতরে কষ্ট করে জমিতে যেতে হয়। তবে গ্রামের সকল কৃষকদের যৌথ প্রচেষ্টায় নদী পারাপারের জন্য গ্রামবাসী বাঁশের তৈরী নড়বড়ে ১টি সাঁকো নির্মাণ করে ছিলেন। মহাস্থান আকন্দপাড়া এ নদী ঘেঁষা গ্রামে বগুড়া-২ শিবগঞ্জ-৩৭ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তি যোদ্ধা শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ এমপির বাড়ি।
তিনি সাম্প্রতিক নিজ গ্রামে বেড়াতে এসে তাঁর এলাকার মানুষের নদী পারাপারের এমন দুর্দশা দেখে হতাশ হয়ে যান। পরে তার নিজ অর্থায়নে লোহার পাইবের খুঁটি ও লোহার ফ্রেম কাঠের পাড়ানী দিয়ে সাঁকো তৈরি করে এলাকার মানুষের নির্বিঘ্নে পারাপার হতে উপক্রম করেন। বর্তমান সাঁকোটি এলাকার মানুষের কাছে দৃষ্টিনন্দন হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে।
এলাকার বুলু মুন্সি নামের এক ব্যক্তি জানান, এমপি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ বাঁশের বিকল্পে সদ্য এ সাঁকো নির্মাণ করায় পূর্ব অঞ্চলের মানুষ ব্যবসা- বাণিজ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, কৃষিপণ্য বিক্রি সহ প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কাজেই প্রতিদিন কাঠের এ সাঁকো ব্যবহার করে যাতায়াত করছেন। এলাকার কোহিনূর নামের এক গৃহবধূ জানান, এমপি জিন্নাহ আমাদের এলাকার গর্ব, তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ২ বারের সংসদ সদস্য তার নাম করন করে এখানে আমরা একটি উন্নতমানের সেতু চাই।
এলাকার হেলাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি বলেন, একটি উন্নতমানের ব্রিজ হলে বদলে যাবে এলাকার অর্থনীতি। বিশেষ করে ওপারের শতশত হেক্টর ফসলি জমির কৃষিতে নিঃসন্দেহে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। ব্রিজের কারণে বাড়বে কৃষিপণ্যের উৎপাদন। দ্রুত স্থানবদল হবে উৎপাদিত কৃষি পণ্যের।
এর মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়নে পূর্ব এলাকার ৮ গ্রামের মানুষের ভাগ্যে পরিবর্তন আনবে এ ব্রিজ। এ ব্রিজ নির্মাণ হলে সবার আগে উপকার হবে এলাকার পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর। কারণ সেতুর কারণে মানুষের আয় বাড়বে এবং পরিবর্তন আসবে জীবন-জীবিকায়। একটি উন্নতমানের ব্রিজ দিয়ে ৮ গ্রামের দুঃখ ঘুচাতে এলাকাবাসী এমপি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ’র কাছে দাবি জানিয়েছেন।