এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
অন্ধকারেই থেকে যাচ্ছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি যমুনা নদীর চরের ছেলে-মেয়েরা। বাবা-মায়ের মতোই কোনোভাবেই পাচ্ছেনা শিক্ষার আলো। চর এলাকায় কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকাই ছেলে- মেয়েরা সকাল থেকে শুরু করে রাত প্রর্যন্ত বাবা মার সাথে গৃহস্থালী কাজে সহযোগীতা করেই সময় পার করছে তারা। শিক্ষা ক্ষেত্রে কোন ধারনা না থাকায় দিন দিন তাদের প্রতিভা গ্রাস করে ফেলছে আদিকালের জীবন ব্যবস্থা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিল এলাকার বাসিন্দাদের ছেলে মেয়ে লেখা পড়ার দিকে মনোযোগী হয়ে ওঠে। ঘুম থেকে জেগে ওঠে প্রস্তুতি নিতে হয় লেখা পড়ার। অনেক ক্ষেত্রে বাবা-মা কোমলমতি ছেলে মেয়েদের নিয়ে যেয়ে থাকেন শিক্ষালয়ে। ছেলে-মেয়েদের লেখা- পড়া শেখাতে বাবা মা কত কিছুই না করে থাকেন। ছেলে-মেয়ের শিক্ষা লাভের জন্য প্রানন্তকর চেষ্টা নিত্য দিনের হলেও, চর এলাকায় বাব-মায়ের ক্ষেত্রে ঠিক উলটো সেটি।
এখানকার বাবা-মা’রা রাত পোহালেই সাংসারিক কাজে সহযোগিতা করার জন্য নিয়ে যান কোমলমতি ছেলে মেয়েদের। গত শনিবার সারিয়াকান্দি উপজেলার কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের তালতলা, কোমরপুর, মিলনপুর, চরমাটিয়ান ও বানিয়াপাড়া চর এলাকায় ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র, চরের ওই সব গ্রাম গুলোতে। এই ৫টি চরে নেই কোনরকমের বিদ্যালয়। বানিয়াপাড়া চর গ্রামে একটি মক্তব ঘর থাকলেও তা একেবারেই নরবড়ে। বর্তমানে বেতন বন্ধের কারণে সেটিও কয়েক বছর হলে বন্ধ রয়েছে। ঘরের দরজা-জানালা বলে কিছু নেই।
বালুময় মেজে থাকলেও ঘরের চারপাশের নিচের অংশে নেই কোন বেড়া। বয়সকদের সাথে সকাল বেলা পান্তাভাত অথবা খুদসিদ্ধ খেয়ে ছেলে মেয়েরা স্কুলে যাওয়ার পরিবর্তে সহযোগীতা করছে চরের কৃষি কাজে অথবা মা’র সাথে বাড়ির বিভিন্ন কাজে কর্মে। খাঁ- খাঁ রোদ্র উপেক্ষা করে কাজ কাম করছে হরেক রকমের আবাদি জমিতে। আবার কোন শিশু-কিশোর ঘোড়ার গাড়ি, ঘোড়া, মোটরসাইকেল চালিয়ে অথবা রকমারি কষ্ট সাধ্য কাজ করে চলেছে তারা। মিলনপুর চরের ওয়াজ কুরুনির (১৫) সাথে কথা হয়। ওয়াজ কুরুনি সকাল থেকে শুরু করে রাত প্রর্যন্ত চরের পথ- ঘাটে ঘোড়া চালিয়ে দৈনিক ৮/৯ শ’ টাকা রোজগার করে থাকে।