এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
এক সময় সাংবাদিকতা ছিল সমাজের বিবেক, সত্য অনুসন্ধানের প্রতীক। সেই সাংবাদিকতা ছিল অনুপ্রেরণাদায়ক, শালীন ও বস্তুনিষ্ঠ – যেখানে লক্ষ্য ছিল জনস্বার্থ, সত্য উদ্ঘাটন এবং সমাজকে সচেতন করা। কিন্তু বর্তমানে সেই জায়গা দখল করে নিয়েছে তথাকথিত “ফেসবুক সাংবাদিকতা” যেখানে সংবাদ নয়, বরং ভিউ, রিয়্যাকশন আর শেয়ারই মূল লক্ষ্য।
এখন অনেকেই মনে করেন, হাতে একটি মোবাইল ফোন আর ক্যামেরার সামনে নাটকীয়ভাবে কথা বললেই তিনি সাংবাদিক! তাদের কাছে তথ্য যাচাই, নৈতিকতা বা পেশাদারিত্বের কোনো মূল্য নেই। বরং কে কতটা ভাইরাল হতে পারে, কে বেশি “সেন্টিমেন্ট” তৈরি করতে পারে – সেটাই হয়ে গেছে যোগ্যতার মানদণ্ড।
এই প্রবণতা সাংবাদিকতার সৌন্দর্য, শৈলী ও পেশাদারিত্বকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
যে সাংবাদিকতা একসময় “অনু-সুন্দরী” ছিল – অর্থাৎ ভাবনায় অনুপ্রেরণামূলক, উপস্থাপনায় সংযত ও সত্য অনুসন্ধানে দৃঢ় – তা এখন অনেক ক্ষেত্রেই বিনোদনের খোরাকে পরিণত হয়েছে।
ফেসবুক সাংবাদিকতার এই ঢেউয়ে হারিয়ে যাচ্ছে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, মাঠের বাস্তবতা আর সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর। পরিবর্তে দেখা যাচ্ছে সস্তা লাইভ, কান্নার অভিনয়, মিথ্যা অভিযোগ আর নাটকীয় উপস্থাপনা। ফলাফল – সংবাদমাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থা কমছে, আর সাংবাদিকতার মর্যাদা পড়ছে প্রশ্নের মুখে।
এখন সময় এসেছে – সত্যিকারের সাংবাদিকদের এগিয়ে আসার, এই অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর।
কারণ সাংবাদিকতা কোনো পেশা নয়; এটি একটি দায়বদ্ধতা, একটি নৈতিক অঙ্গীকার।
আর যদি ফেসবুক সাংবাদিকতার এই ধারা অব্যাহত থাকে, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়তো আর জানবেই না “সত্য সাংবাদিকতা” কাকে বলে।

