এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়া সদরের বৃন্দাবন পাড়ায় স্ত্রী বাবার বাড়ী ওয়াজ মাহফিলের দাওয়াতে। এদিকে ঘরে স্বামীর রক্তাক্ত নিথর মরদেহ পড়ে। নিহতের নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে বগুড়া সদর পুলিশ। তার নাম জামাল উদ্দিন খাঁজা (৫৮)।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে শহরতলীর বৃন্দাবন পূর্বপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি ওই গ্রামের আমির হোসেন খলিফার পুত্র। সে ফুয়াং বেকারিতে শ্রমিকের কাজ করতেন।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, শুক্রবার রাতে জামালের বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে দুর্বৃত্তরা তার মাথায় আঘাত করে হত্যা করেছে।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার জামালের স্ত্রী তার ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়ি একই উপজেলার চাঁদমুহায় ওয়াজ মাহফিলের দাওয়াতে যান। নিহত জামাল শুক্রবার রাতে বাড়িতে একাই ছিলেন। শনিবার সকালে তার ছেলে রিমন বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করেন।
এসময় বাবার কক্ষ থেকে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় রিমন একটি মই দিয়ে প্রাচীর টপকে বাড়িতে প্রবেশ করেন। এসময় তিনি দেখতে পান তার বাবা ঘরের মেঝেতে কম্বলের ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। তখন তিনি চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসেন।
ঘটনাস্থলে দেখা যায়, জামালের বাড়িতে ৪টি ঘর আছে। এর ভিতরে ১টি কক্ষে তিনি ও তার স্ত্রী থাকেন। আরেকটি ঘরে থাকেন তার ছেলে রিমন। বাড়ির আরও একটি কক্ষ বন্ধ ও আরেকটি কক্ষে মাজার রয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী আরও বলেন, জামালের বাড়িতে বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ে থাকা হযরত শাহ সুলতান বলখী মাহী সাওয়ারের এক সহযোগীর মাজার।
যুগযুগ ধরে বৃন্দাবন পাড়া এলাকায় এ মাজার রয়েছে। পারিবারিকভাবে ভাগবাটোয়ারা করে জামালের বাড়ির ভিতরে এ মাজারের জায়গাটি পড়ে গেছে। বাড়ির ভিতরে মাজার থাকলেও জামাল এ নিয়ে কোনো আলাদা তরিকত বা কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেননি। তবে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেখানে দোয়া দরুদ পাঠ করতেন। স্থানীয়রা আরও বলেন, জামাল এমন মানুষ এলাকার কারো সাথে তার বিরোধ নেই। তবে কিভাব এই অজাত শত্রু ব্যক্তি খুনের বলি হলেন এমন প্রশ্ন সবার মুখে।
বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল মুন্নাফ জানান, ঘটনার ক্রাইম দৃশ্যলামত সংরক্ষণ করে কাজ করা হচ্ছে। বগুড়া জেলা পুলিশের পাশাপাশি একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছেন। অন্যদিকে সিরাজগঞ্জ থেকে সিআইডির ক্রাইম বিশেষজ্ঞ টিম বগুড়ার উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন। তাদের কাজ শেষে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল শজিমেক কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।