এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
আছর নামাজ শেষে আমবয়ানের মধ্যদিয়ে গতকাল বুধবার (২১ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপি বগুড়া জেলা ইজতেমা। ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের প্রথম বাইপাস বারপুর-ঝোপগাড়ি জেলা তাবলীগ মারকাজ মসজিদ এলাকার প্রায় ১৫ একর মাঠ জুড়ে এই ইজতেমায় হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। দিল্লির নিজাম উদ্দিন মারকাজের অনুসারীগণ এই ইজতেমার আয়োজন করেন।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সকাল থেকে ইজতেমা ময়দান হাজার হাজার মুসল্লির আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠেছে পুরো মাঠ। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কাঁধে-পিঠে প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে নিজ নিজ খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন মুসল্লিরা। ইজতেমা প্রাঙ্গণের আশপাশের এলাকায় শীতের পোশাক, খাবারের দোকান ও কাঁচাবাজার বসেছে।
ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানা যায়, ইজতেমায় ইসলামের সুমহান বাণী, তাওহীদ তথা একত্ববাদের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া ও দ্বীন সম্পর্কে সবাইকে জানানোই হচ্ছে তাবলীগের প্রধান কাজ। আয়োজকরা আশা করছেন ৩ লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান এ ইজতেমায় অংশ নেবেন।
তবে শুধু দেশের বিভিন্ন জেলার নয় মরক্কো, রাশিয়া, ইংল্যান্ড, ভারন, সৌদি আরব, অষ্ট্রেলিয়াসহ অনেক দেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা এসেছেন। মেহমানদের চিকিৎসা সেবার ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এখানে পুলিশের টিম রয়েছে। ইজতেমার জন্য নির্ধারণ করা এলাকায় লাগানো হয়েছে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে চট, কাপড়। সারিবদ্ধভাবে তৈরি করা হয়েছে রান্নার জায়গা। প্রস্রাব-পায়খানার জন্য ব্যবস্থা করা রয়েছে।
গোসলের জন্য পুকুরের ঘাট বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ইজতেমার আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। ইজতেমার আয়োজক কমিটির মো. শাহ আলম জানান, নিজেদের আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে এই ইজতেমার আয়োজন করা হয়েছে। সবকিছু শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলে আগামী বছর থেকে আরও বড় করে আয়োজন করা হবে। ইজতেমায় লক্ষাধিক মেহমানের থাকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এবারের ইজমেতায় কুরআন ও হাদিসের উপর কথা বলবেন দিল্লির নিজাম উদ্দিন, ঢাকার কাকরাইলের মোঃ নাসিম, মাওলানা জিয়াবীন কাছেমীসহ অন্যান্য সাথীগণ। আগামী শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তিন দিনব্যাপি বগুড়া জেলা ইজতেমা। ইজতেমায় শেরপুর উপজেলা থেকে আসা মুসল্লি মো. মোকাব্বর হোসেন জানান, তিনি প্রতি বছর ইজতেমায় আসেন নিজেদের আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে।
দ্বীনের কথা ও আলোচনা শোনার জন্য অনেক মুসলমান এখানে একত্রিত হন। অনেক ভালো লাগে। এখানে কুরআন থেকে হাদিস বর্ণনা করা হয়। জীবনে চলার পথে এই ইজতেমা থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। বগুড়া সদর থানার ওসি মো. নূরে আলম সিদ্দিকি বলেন, ইজতেমা এলাকা জুড়ে পুলিশী নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে তারা দায়িত্ব পালন করছেন। বিদেশি মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ইজতেমা মাঠে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার পাশপাশি তাবলীগ জামায়াতের নিজস্ব সদস্যরাও পাহারার দায়িত্ব পালন করছেন। ইজতেমা স্থান মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় যানবাহন চলাচল ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সর্তকবস্থায় থাকবে।।