এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়ায় স্কুলছাত্র তাহসিন হত্যার প্রধান আসমি আমিনুর ইসলাম (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাত ৯টায় শহরের সপ্তপদী মার্কেট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার আমিনুর বগুড়া শহরের পশ্চিম গোদারপাড়া এলাকার জলিলের ছেলে। নিহত তাহসিন একই এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে ও স্থানীয় এক কিন্ডারগার্টেন স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন উপশহর ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) সুজন মিঞা। পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, তাহসিন হত্যার পর থেকেই শহর জুড়ে অভিযান চালানো হয়। রাতে শহরের সাতমাথার সপ্তপদী মার্কেটে মোবাইল রিচার্জ করতে আসেন আমিনুর। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ সময় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ৭টার দিকে পশ্চিম গোদারপাড়া এলাকায় আমিনুর ও তার স্ত্রী শোভাসহ কয়েকজন স্কুলছাত্র তাহসিনকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে তাহসিনের বাবা আব্দুল কুদ্দুস ছেলেকে গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে তাহসিন মারা যায়।
এ ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় ৭ জনকে আসামি করে তাহসিনের বাবা আব্দুল কুদ্দুস হত্যা মামলা দায়ের করেন। তাহসিনের বাবা আব্দুল কুদ্দুস জানান, প্রায় একযুগ আগে দুপচাঁচিয়ার তাসলিমা বেগমকে বিয়ে করেন তিনি। তাদের সংসারে তাহসিনসহ তিন সন্তান আছে। প্রায় বছর তিনেক আগে প্রতিবেশি দাদন ব্যবসায়ী আমিনুরের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সময় সালিশ বসিয়েও মিমাংসা করা যায়নি।
এক পর্যায়ে কুদ্দুস এক বছর তিনমাস আগে তার স্ত্রী তাসলিমাকে তালাক দেন। এরপর থেকে তিন সন্তানকে নিয়ে কুদ্দুস নিজের বাড়িতে ও তাসলিমা তার বাবার বাড়িতে থাকতেন।
মঙ্গলবার সকালে তাসলিমা তার সন্তানদের দেখতে গোদারপাড়ায় কুদ্দুসের বাড়িতে আসেন। সকাল ৭টার দিকে কুদ্দুসের মা কুলসুম বেগম বাড়ি থেকে তাসলিমাকে বের করে দেন। এ সময় আমিনুর ও তার স্ত্রী শোভা তাসলিমাকে দেখতে পেয়ে গালিগালাজ শুরু করেন।
একপর্যায়ে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে কুদ্দুসের মা কুলসুমকে মারধর শুরু করেন। টের পেয়ে কুদ্দুস তার মাকে উদ্ধার করতে গেলে আমিনুর ও শোভা তার আত্নীয়-স্বজনকে ডাক দেন। প্রায় সাত থেকে আটজন মিলে আমিনুর ও শোভার পক্ষ নিয়ে কুদ্দুস ও তার মা কুলসুমকে মারধর করতে থাকেন।
এরমধ্যে কুদ্দুসের মেজ ছেলে তাহসিন সেখানে গেলে আমিনুর লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাহসিনকে উদ্ধার করে তার বাবা কুদ্দুস শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বগুড়া সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা বাবু কুমার সাহা বলেন, স্কুলছাত্র হত্যার ঘটনায় মূল আসামিকে গ্রেফ তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাকি আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।।