শেরপুর বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার শেরপুরে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মুখে গামছা বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তরা। পরে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কিন্তু ওই গৃহবধূর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৩জানুয়ারি) রাত অনুমান একটার দিকে উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের দক্ষিণ জামুর গ্রামের ফসলি মাঠে এই ওই গৃহবধূর বর্ণনা থেকে জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণ জামুর গ্রামস্থ বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন ওই গৃহবধূ।
ঘটনার রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাড়ির প্রধান ফটক খুলে বের হন। এসময় ওঁৎপেতে থাকা চার থেকে পাঁচজন ব্যক্তি তার মুখে গামছা বেঁধে তুলে নিয়ে যায়। এমনকি গ্রামের ফসলি মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে এক ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ করেন এবং অন্যরা পাহারায় নিয়োজিত ছিলেন। একপর্যায়ে ধর্ষণকারীকে চিনতে পারেন তিনি। তার নাম আব্দুল মান্নান (৪০)।
সে একই গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে। আর এই চিনে ফেলার কারণেই তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তারা।
এরই ধারাবাহিকতায় মান্নান ও তার সহযোগিরা ওই গৃহবধূর মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন। এতে তাঁর মাথা ফেটে যায়। পরে মৃত ভেবে তাঁকে ফেলে রেখে চলে যায়। পরবর্তীতে বাবার পরিবারের লোকজন ঘর থেকে বের হন।
এরপর তাঁর শয়নকক্ষ ও বাড়ির দরজা খোলা দেখে তাঁকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে গ্রামের ফাকা মাঠ থেকে গোংরানির শব্দ ভেসে আসে। এরপর রক্তাক্ত ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাৎক্ষণিক তাঁকে বগুড়ায় শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় বলে পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসক গুলশান আরা বলেন, ওইগৃহবধূকে পাশবিক নির্যাতন চালানোর পর মাথায় আঘাত করা হয়। এতে মাথা ফেটে গেছে এবং প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাঁর অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁকে বগুড়ায় শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক।
এব্যাপারে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান খোন্দকার এ প্রসঙ্গে বলেন, ঘটনাটি নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত কাজ শুরু করা হয়েছে। তাই ঘটনাটি সম্পর্কে এই মুহুর্তে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ওই ঘটনায় যারাই জড়িত থাক না কেন, তাদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এজন্য পুলিশি অভিযান চলছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তাদেরকে ধরা সম্ভব হবে বলে আশাবাত ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি উক্ত ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।