http://pranershohorbd.net/wp-content/uploads/2022/09/logo-ps-1.png
ঢাকাFriday , 15 March 2024
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া বার্তা
  6. কিশোরগঞ্জ
  7. কৃষি বার্তা
  8. খুলনা
  9. খেলাধুলা
  10. খোলা কলাম
  11. গনমাধ্যাম
  12. গাইবান্ধা
  13. গাজীপুর
  14. চট্টগ্রাম
  15. চাকরি
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বগুড়ায় ইফতারের বিলাসী পণ্য খেজুরের দাম নাগালের বাইরে

admin
March 15, 2024 8:51 am
Link Copied!

বগুড়া প্রতিনিধি:

রমজানে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ইফতারে চাহিদার শীর্ষে থাকে খেজুর। তবে এই রমজানে খেজুরের দামের মূল্যবৃদ্ধি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের ইফতারে যেন খেজুর রাখাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। চড়া নিত্যপণ্যের বাজারে ইফতারে খেজুর হয়ে উঠেছে রীতিমতো বিলাসী পণ্য।
১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে বগুড়া শহরের ফলপট্টি আড়ত ও রাজাবাজার ঘুরে দেখা যায়, সৌদি, মিশর, দুবাই, তিউনিসিয়া, ইরান থেকে আসা বিভিন্ন জাতের খেজুরে ভরা বাজার। আমদানি করা নানান জাতের খেজুরের মধ্যে রয়েছে মরিয়ম, মাবরুম, কালমি, দাবাস, জাহিদি, সায়ের, আজওয়া, মেডজুল, সুক্কারি ও মাশরুখ। এ বছর ৫ হাজার টাকা প্যাকেট হিসেবে প্রতি কেজি মরিয়ম খেজুর পাইকারি বাজারে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে বিক্রেতারা এই খেজুর আবার ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি করছেন। আজওয়া খেজুর পাইকারিতে কেজি প্রতি ১২০০ টাকায় ও খুচরা বাজারে দুইশো টাকা বেশি দামে ১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মেডজুল খেজুর এক কেজি ১৩৫০ টাকা পাইকারি ও খুচরা বাজারে দেড় হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ দাম বেড়েছে উন্নতজাতের এই তিন প্রকার খেজুরের। গেলো রমজানে পাইকারিতে মরিয়ম ৭০০, আজওয়া ৯০০ ও মেডজুল ১১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
মানভেদে এবছর মাবরুম খেজুর পাইকারিতে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে গিয়ে কেজি প্রতি ১০০ থেকে দেড়শো টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এই খেজুরের। গত বছর এই খেজুরের পাইকারি দাম ছিল ৪৫০ থেকে ৬৪০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানান, এবছর দাম বাড়ায় মাবরুম, মরিয়ম, আজওয়া ও মেবডুলের যে চাহিদা ছিল সেটা কিছুটা কমেছে। সাধারণ মানুষ বাজারে তুলনামূলক কম দামি খেজুর খুঁজছেন। এছাড়াও সাধারণ মানুষের খেজুর হিসেবে পরিচিতি ইরাকের জাহিদি খেজুর খুচরা বাজারেই ২০০ থেকে আড়াইশো টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর রমজানে এই খেজুর ছিল ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি।
খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি খেজুরের দাম বেড়েছে ২শ থেকে ৬শ টাকা পর্যন্ত। মধ্যমানের দাবাস, মাশরুখ, সুক্কারি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের দাবি, আমদানি নির্ভর হওয়ায় আমদানি ব্যয়, ভ্যাট, করসহ নানা খরচের কারণে খেজুরের দাম এবার গতবারের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। এছাড়া ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, কাস্টম ডিউটি ট্যাক্স ও রেগুলেটরি ডিউটি ট্যাক্স দাম বাড়ার প্রধান কারণ। বগুড়ার ফলপট্টির আমদানিকারক নূর এন্টার প্রাইজের সত্ত্বাধিকারী মুকুল হোসেন বলেন, খেজুরের এত চড়া মূল্য কখনো হয়নি। ভ্যাট-ট্যাক্সের কারণে বাজারে অস্থিরতা বেশি। গত বছর প্রতি কনটেইনার মাল আনতে ট্যাক্স ছিল তিন লাখ, এবছর হিমায়িত কনটেইনার ট্যাক্স ধরেছে ৫৪ লাখ টাকা। কেউ এর চেয়ে কিছু কমবেশি দিয়েও নিয়েছে। প্রতি কনটেইনারে মাল থাকে ২৫ টন। ট্যাক্স বেশি হওয়ার কারণে অনেকে মাল আমদানি করতে পারেনি। ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকারদের থেকে মাল কিনে চাহিদা মেটাতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাজারের সর্বোচ্চ দামের মাবরুম, মরিয়ম, মেডজুল, কালমি, আজওয়া এবার কম চলছে। মালের মজুতও রয়েছে। কিন্তু দামি খেজুরের ক্রেতা কম।

একই তথ্য দেন সায়েম ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, গত বছর থেকে হু-হু করে খেজুরের দাম বেড়েছে। এবছর এক লাফে দাম হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। নতুন করে যোগ হয়েছে কাস্টম ডিউটি ২৫ শতাংশ। সঙ্গে রয়েছে রেগুলেটরি ডিউটি ও ভ্যাট ১৫ শতাংশ। এসব খাতে আগে এত রাজস্ব দিতে হতো না ব্যবসায়ীদের। মূলত এর প্রভাবই বেশি পড়েছে খেজুর আমদানিতে। এবার সরকারের নির্দেশে ভ্যাট ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করায়ও ব্যাংকে এলসি ও ডলারের সংকটের ফলে দাম কমছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফলপট্টির কিছু পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, এলসি খোলার জটিলতাতো করোনার পর থেকেই রয়েছে। এটা স্বাভাবিক বিষয়। কাস্টম ডিউটি ট্যাক্স, রেগুলেটরি ডিউটি ট্যাক্স যুক্ত হওয়ায় দাম বেড়েছে এটা ঠিক। কিন্তু আমদানিকারক, কমিশন এজেন্ট সিন্ডিকেটেরও কিছুটা প্রভাব রয়েছে। অনেক আমদানিকারক শুল্ক ফাঁকি দিতে সৌদি, মিশরের উচ্চমূল্যের খেজুর কম দাম দেখিয়ে আমদানি করেছেন। কিন্তু বাজারে শুল্কের অভিযোগ দিয়ে দ্বিগুণের বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বড় বড় ৫ থেকে ৭টি প্রতিষ্ঠান এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ি থেকে নিজ দোকানে বিক্রির জন্য পলাশবাড়িতে খেজুর কিনতে এসছেন সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত বছর যেই প্যাকেট খেজুর ২৮০০ থেকে ৩ হাজারে কিনেছি এবার সেই খেজুর ৩৯০০ থেকে ৪২০০ টাকায় কিনতে হলো। তাও সব আড়তে সব খেজুর নেই। ঘুরে ঘুরে কিনতে হয়েছে। যা দাম আর সব খরচ বাদে গ্রামে গিয়ে কেজিতে ১০ টাকাও লাভ করতে পারবো না।
ফুটপাতের খেজুর বিক্রেতা সবুজ মিয়া বলেন, গতবছর খেজুরের দামের তুলনায় এ বছর ডাবল দাম। মূল্য বৃদ্ধির কারণে লোকজন গতবছর ৪-৫ কেজি করে কিনলেও এবছর খেজুর কিনছে হাফ কেজি আড়াইশো গ্রাম করে। প্রতিবারের তুলনায় এবার বিক্রি কমেছে।
খুচরা খেজুর বিক্রেতা শ্রী বিবেক কুমার সিংহ বলেন, খেজুরের দাম বৃদ্ধির কারণে কাস্টমার কমে গেছে। দাবাস খেজুর ও খালাস খেজুর এবার তুলনামূলকভাবে একটু বেশি বিক্রি হচ্ছে।
খেজুরের বাজারে আসা সিএনজি চালক নজরুল ইসলাম জানান, এবার আমরা খেজুর খেতে পারবো না। সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে খেজুরের দাম।

ক্রেতা সোহেল রানা জানান, এবার খেজুর ছাড়াই ইফতার করতে হবে। সরকারের কাছে অনুরোধ খেজুরের দামের ব্যাপারটা দেখতে। এভাবে দাম বাড়লে খেজুর ছাড়াই ইফতার করতে হবে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে। দামে আকাশ-পাতাল পার্থক্য রেখে বেচা-বিক্রির সুযোগ নেই।

আমাদের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল"প্রাণের শহর বিডি'র জন্য সারাদেশব্যাপী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা অতিসত্বর যোগাযোগ করুন অথবা সিভি পাঠিয়ে দিন। সিভি পাঠানোর ইমেইল Mintuislam59@gmail.com, আমাদের দৈনিক প্রাণের শহর বিডি অনলাইনে সারাদেশের পাঠকরা নিউজ পাঠাতে পারেন" নিউজ পাঠানোর ইমেইল pranershohorbd@gmail.com এ। আমাদের খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।