দৈনিক প্রাণের শহর বিডি ডেস্ক:
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নের উপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে, কারণ গত ১৫ বছরে বাজেট ১১ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদে আজ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, সরকারি দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা এ কথা বলেন।
তারা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট দেশের চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করতে সহায়ক হবে।
চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং হামাস-ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে ৬ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী ফারুক খান বলেন, ‘দেশের বিগত সময়ের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি বজায় রাখতে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করার জন্য জাতীয় বাজেটে প্রস্তাব করা হয়েছে।’
গত পনের বছরে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার সাড়ে এগারো গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের মাথাপিছু আয় ২০০৫ সালে ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার এবং এখন তা পাঁচ গুণ বেড়ে ২ হাজার ৭৮৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।’
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ২০০৮ সাল থেকে গত ১৬ বছরে জনকল্যাণে বরাদ্দ ইতিমধ্যে ১২ গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ ছিল ২০০৮ সালে মাত্র ১ হাজার ১৩ কোটি টাকা এখন তা ১২ হাজার কোটি টাকার উপরে উন্নীত হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘টেকসই উন্নয়নের পথ অনুসরণ করে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে অগ্রসরমান’ শীর্ষক প্রস্তাবিত ৫৩তম বাজেট, যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় মাত্র ৪.৬ শতাংশ বড়। চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং হামাস-ইসরায়েল-ফিলিস্তিন এর সংঘাত যা একটি উদীয়মান অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই সময়ে প্রস্তাবিত বাজেট স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করবে।’
প্রস্তাবিত বাজেটকে মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট আমাদের ক্ষুদ্র অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাজেটে মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সুনীল অর্থনীতির উন্নয়নকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিগত ১৬ বছরের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ২০০৮ সালে টেলি ডেনসিটি ছিল ৩২ শতাংশ, ২০২৩ এ এসে হয়েছে ১১১ শতাংশ। সেলুলার ফোন ২০০৮ সালে ছিল ৪ কোটি, এখন তা ৪০ কোটি। দেশে এখন ফোর-জি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটি। আমাদের মোবাইল কাভারেজ বর্তমানে ৯৮ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ১৩ কোটি।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের আগে ইন্টারনেটের দাম ছিল প্রতি এমবিপিএস ৮৫ হাজার টাকা, বর্তমানে তা কমিয়ে মাত্র ৬০ টাকায় আনা হয়েছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্য শাজাহান খান উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী সরকারি চাকুরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা চালু, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার করা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ভাতা ১০ হাজার ও মেম্বারদের ৮ হাজার করার প্রস্তাব করেন।
আলোচনায় আরও অংশ নেন- সরকারি দলের সদস্য রফিকুল ইসলাম বীরোত্তম, একে আবদুল মোমেন, একেএম এনামুল হক শামীম, সাজ্জাদুল হাসান, সাঈদ খোকন, আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিন, আবদুল আজিজ, জিল্লুর রহমান, তানভীর শাকিল জয়, আব্দুল্লাহ আল কায়সার, শফিউল আলম চৌধুরী, শাহিদা তারেখ দীপ্তি, কোহেলি কুদ্দুস, স্বতন্ত্র সদস্য মোসাঃ তাহমিনা বেগম ও পংকজ নাথ।
-বাসস।