এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
একটি ব্রিজ লাখো মানুষের শতাব্দীর দাবি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম কেটে গেছে প্রতিশ্রুতি আর মাপ ঝোপে, রদবদল হয়েছে বহু সরকার। কিন্তু স্বাধীনতার ছাপ্পান্ন বছরেও মেলেনি একটি ব্রিজ। দুই জেলার শেষ প্রান্তে হওয়ায় ঠেলাঠেলি আর লাভ ক্ষতির হিসাবে আলোর মুখ দেখেনি ব্রিজটি।
বলছি সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের অদূরে রতনকান্দি ইউনিয়নের বুক চিরে বয়ে চলা ইছামতী নদীর অববাহিকায় ”একডালা” পাটনি বাড়ি ঘাটের কথা। বলা-বাহুল্য বগুড়া জেলার দক্ষিণের শেষ প্রান্তে ধুনট উপজেলার কোল ঘেঁষে গোপালনগর ইউনিয়নের পূর্ব দক্ষিণ পাশে একডালা ঘাটের অবস্থান।
ভৌগোলিক কারণে সিরাজগঞ্জ এবং বগুড়া জেলা পাশাপাশি হওয়ায় আদি কাল থেকে দুই জেলার মাঝে অর্থনীতি রাজনীতি ভাষা যোগাযোগ এবং সংস্কৃতির গভীর সম্পর্ক সূচিত হয়। কিন্তু দুটি জেলার সংযোগ স্থলে ইছামতী নদীর ”একডালা ঘাট” নিতান্তই একটি দুঃখের নাম। যা দুই জেলার আধুনিক যোগাযোগের অন্যতম অন্তরায় বলে বিবেচ্য।
সিরাজগঞ্জ জেলার প্রভাবশালী নেতা প্রয়াত আলহাজ্ব মোহাম্মদ নাসিম এবং তার পুত্র তানভীর শাকিল জয়ের প্রতি আস্থা রেখেছিল দুই জেলার মানুষ। ভেবেছিলাম একদিন হয়তো দুঃখ ঘুচবে আপামর জনসাধারণের। কিন্তু না, দুটি জেলার শেষ প্রান্তের দিকে ” একডালা ঘাটের অবস্থান হওয়ায় দো’টানায় পড়ে রয়েছে ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগটি।
যোগাযোগ এবং গুরত্বের কথা বিবেচনা করলে অবশ্যই এই স্থানে ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন বগুড়া এবং সিরাজগঞ্জ জেলার সাধারণ মানুষ। একটা সময় সিরাজগঞ্জ শহরের সাথে বগুড়া শহরের তাঁত শিল্প কুটির শিল্প খাদ্য শস্য কাঁচামাল যন্ত্রপাতি ক্রয় বিক্রয়ের অন্যতম মাধ্যম ছিল এই ঘাট। ইদানিং এই ঘাটে রয়েছে পাশাপাশি দুটি সাঁকো। যেখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থানীয়রা সাঁকো নির্মাণ করে তথাকথিত ইজারাদার এবং ঘাটের মাঝি পরিচয়ে পথচারিদের চাপে ফেলে তোলেন টাকা। কখনো কখনো দেখা যায় এ নিয়ে পথচারী ও ঘাটেলদের সাথে বাকবিতন্ড।
বর্ষা মৌসুমে জনসাধারণের ভোগান্তির চিত্র এবং দুই ঈদে ঘরে ফেরা মানুষদের মনে করিয়ে দেয় টেকসই একটি ব্রিজের গুরুত্ব। মাঝে মাঝে নৌকা ডুবি, সাঁকো দুর্ঘটনা এবং চাপ সৃষ্টি করে টাকা আদায় কোমলমতি শিক্ষার্থী ও ভ্রমণ পিপাসু যাত্রীদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এছাড়া মুমূর্ষু রোগী এবং কাঁচামাল পরিবহনে ঝুঁকি নিয়ে চলে গ্রামের সাধারণ মানুষ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুই পারের মানুষের ভোগান্তির চিত্র, বয়রা ভেন্নাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ারত অবস্থায় একডালা নদী পারাপার হওয়ার ভোগান্তি এবং শৈশব স্মৃতি উল্লেখ করেছেন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
তিনি আরো লিখেছেন ব্রিজটি নির্মিত হলে সিরাজগঞ্জ জেলার রতনকান্দি, গান্ধাইল, শুভগাছা, মেছড়া, পিপুলবাড়িয়া-বাগবাটি এবং প্রতিবেশী বগুড়া জেলার অলোয়া মথুরাপুর হাট, গোপালনগর, চান্দাইকোনা, ধুনট, চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের বেশ কয়েক লাখ মানুষ সহজেই যোগাযোগ করতে সক্ষম হবে।
এমন হাজারো গল্প, দুই পাড়ের মানুষের ভোগান্তি লাঘব করতে পারে একটি টেকসই ব্রিজ। বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার মাঝে বাড়তে পারে আত্মিক সম্পর্ক। সিরাজগঞ্জ জেলার বাসিন্দা মেধাবী শিক্ষার্থী আতিকুল ইসলাম আকুল, রাসেল মাহমুদ, আসিফ ইকবাল, সাব্বির আহম্মেদ ব্রিজটি নির্মাণের জোর দাবি জানান। আগামী দিনে দুই জেলার অকৃত্রিম বন্ধু হতে পারে একটি ব্রিজ। যা নতুন সরকারের নিকট দুই জেলার জনগণের সুদৃঢ় প্রত্যাশা!

