এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়ার ধুনট উপজেলার নিমগাছি, কালের পাড়া ও চিকাশী ইউনিয়নের মোট একশত টি পরিবার তান্ড চালিয়েছে মোখা ঝড়।
এতে লন্ডভন্ড হয়েছে ১নং নিমগাছি ইউনিয়নের বেড়েরবাড়ী, লাংলু, ফরিদপুর, পিরাপাট, জয়সিং, নান্দিয়ার পাড়া, শিয়ালী, নিতিপোত্তা গ্রাম।
২নং কালের পাড়া ইউনিয়নের হেউটনগর, রামনগর, ঈশ্বর ঘাট, কান্তনগর, চর পাড়া, সরুকগ্রাম, কাদাই, আড়কাটিয়া গ্রাম।
৩নং চিকাশী ইউনিয়নের পর পারলক্ষ্মীপুর, সুলতানাটা, বড় চাপড়া, গ্রাম ও চিকাশী টেকনিক্যাল এন্ড বিএম ইন্সটিটিউট কলেজ। এছাড়া ঝড় ও বৃষ্টিতে আম, ভুট্টা, গম, ধানসহ উঠতি ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
ঝড়ের স্থায়িত্ব কম হলেও কোথাও কোথাও মোখা আঘাতে ঘর-বাড়ির ক্ষতির পাশাপাশি উড়ে গেছে স্থাপনা। তবে বৃষ্টির পানির তোপে মাটিতে নুয়ে পড়েছে কৃষকের সবুজ ক্ষেত।
শুক্রবার (১২ ই মে) রাত্রি সাড়ে ১০ টার পর থেকে থেমে থেমে মেখা ঝড় ও বৃষ্টি আঘাত হানে। কৃষি বিভাগ ও আবহাওয়া অধিদপ্তর এখন পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি।
নিমগাছি ইউনিয়নে ইউনিয়নে সাবেক চেয়ারম্যান সুজাউদ্দৌলা রিপন বলেন, আমাদের ইউনিয়নের শুক্রবার রাত্রি অনুমান ১০ থেকে ১২ টার মধ্যে মেখা ঝাড়ে মোট ৬টি গ্রামের ২০টি পরিবারের বাড়ি ঘর ও গাছ-পালা উপড়ে পড়ে, বাড়িঘরের ভেঙে যায়। কারো কারো ঘরের চাল উড়ে গেছে। ভেঙ্গে পড়েছে ঘরের টিনের বেড়া। ক্ষতি হয়েছে ধান, ভুট্টা, আম ও কলাগাছের।
মোখা ঝড়ে চিকাশী ইউনিয়নের পার লক্ষীপুর গ্রামের সোহেল রানা, জুয়েল রানা, জাহানারা বেওয়া, এলাহি খাতুন, আব্দুস সাত্তার, সুন্দরী বেওয়া, নাসরিন বেওয়া, গোলাম রব্বানী, জাবেদ আলী, আব্দুল গফুর, বাচ্চু মিয়াসহ আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে অসংখ্য ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
২নং কালের পাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম মিঠু জানান, ঝড়ের স্থায়িত্ব ছিল ১২ থেকে ১৫ মিনিট ছিল। কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যে ঝড়ের বেগে নিমগাছি, কালের পাড়া ও চিকাশী ইউনিয়নের অনেক ঘরবাড়ি, গাছগাছালি ও উঠতি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
পার লক্ষ্মীপুর গ্রামের সোহেল রানা বলেন, সারা দিন আকাশে মেঘ ছিল না। হঠাৎ রাতে যখন ঘুমানোর প্রস্তুতি চলছিল, তখন ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। মেখা ঝড়ে বাতাসের খুব বেগ ছিল। আমার নিজের ঘর-বাড়িসহ আশপাশের অনেকের বাড়ি ভেঙে তছনছ হয়েছে।
২নং কালের পাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন শিপন বলেন, রাতে মেখা ঝড় থেমে যাওয়ার পর বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেছি। প্রায় আমার ইউনিয়নের ২০টি বাড়ি-ঘর ভেঙে গেছে। দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। তবে তালিকা করে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করা হবে।
বিভিন্ন এলাকার কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেখা ঝড়ে ও বৃষ্টিতে আম ঝরে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় আধাপাকা ও পাকা গম, ধান আর ভুট্টা মাটিতে পড়ে গেছে ও বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ধুনট উপজেলার নিমগাছি, কালের পাড়া ও চিকাশী ইউনিয়নের মোখা তান্ডবের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শনিবার সকালে খোঁজখবর নেন এবং আর্থিক সহযোগিতা করেন ধুনট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই খোকন।