দৈনিক প্রাণের শহর বিডি ডেস্ক:
রংপুর অঞ্চলে দ্রুত বাড়ছে ডেঙ্গু। এ কারণে বেড়েছে মশার কয়েলের চাহিদা। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অনুমোদন ছাড়াই নিম্নমানের কয়েল উৎপাদন করে বাজারজাত করছে। এতে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন ক্রেতারা।
গত বুধবার বিএসটিআই রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় ও গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এ সময় বিএসটিআইর সনদ ছাড়াই কয়েল উৎপাদন ও বিক্রির অভিযোগে দুই কারখানা সিলগালা করা হয়। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো– গোবিন্দগঞ্জের দিঘিরহাট এলাকার মেসার্স ফারকো কেমিক্যাল (ব্র্যান্ড-ফারকো) ও মেসার্স হ্যাভেন ইন্টারন্যাশনাল (ব্র্যান্ড-বীমা বাংলা)।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক এবিএম আবু হানিফ জানান, প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে। জনসচেতনতামূলক প্রচারণার পাশাপাশি জেলা পর্যায়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
জানা গেছে, ডেঙ্গু বিস্তারের সঙ্গে কয়েলের চাহিদাও বেড়েছে কয়েক গুণ। বাজার তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে কয়েল। মানভেদে প্রতি প্যাকেট (১০ পিস) বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। কিন্তু বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মশার কয়েল নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এসব কয়েলের কোনো কার্যকারিতা নেই। সারারাত জ্বালালেও মশা মরে না।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে রংপুর সিটি বাজারে এক প্যাকেট মশার কয়েল কেনেন নগরীর হনুমানতলা এলাকার বাসিন্দা অটোরিকশাচালক মহসিন আলী। এ সময় তিনি কয়েলের মান নিয়ে দোকানির সঙ্গে তর্কে জড়ান। তিনি বলেন, ‘এলা আর আগের কয়েল নাই। সারা রাইত কয়েল জ্বলে, ট্যাকা খরচ হয় কিন্তু মশা পালায় না।’ উপস্থিত লোকজনও তাঁর কথায় সায় দেন। তাদের অভিযোগ, চাহিদা বাড়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা ভিন্ন ভিন্ন মোড়কে নিম্নমানের কয়েল বিক্রি করছে। আরেক ক্রেতা মুন্সিপাড়ার আব্দুল হান্নান বলেন, ‘হামার গরিব মাইনসেরা একটেও ভালো নাই। কয়েল দিয়াও যদি মশা না পালায়, তাইলে হামারগুলার তো ডেঙ্গু হইবে!’
বিএসটিআই সূত্রে জানা যায়, রংপুর বিভাগে লাইসেন্সপ্রাপ্ত তিনটি মশার কয়েল কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে রংপুরের ভরসা কয়েল, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের নিউটেক কয়েল এবং দিনাজপুরের সিমফন। এর বাইরে অবৈধভাবে বিভিন্ন কোম্পানির নামে কয়েল উৎপাদন হচ্ছে। গত এক বছরে অবৈধ সাতটি কয়েল কারখানা সিলগালা করা হয়। কারখানাগুলো হলো– রংপুরের হারাগাছের কাজল কেমিক্যাল, সাগর এন্টারপ্রাইজ, নিশাত কেমিক্যাল, সোনালী কেমিক্যাল এবং গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের আল আরাফ কনজ্যুমার্স, মেসার্স ফারকো কেমিক্যাল ও মেসার্স হ্যাভেন ইন্টারন্যাশনাল।
বিএসটিআইর উপপরিচালক (মেট্রোলজি) ও রংপুর বিভাগীয় অফিস প্রধান মফিজ উদ্দিন আহমাদ সাংবাদিকদের জানান, অবৈধভাবে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মশার কয়েল তৈরি হচ্ছে। নিম্নমানের কয়েলে যারা ক্রেতা ঠকাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।